ঢাকার প্রাণকেন্দ্র তেজগাঁও এলাকায় নারী শিক্ষার অন্যতম সুপরিচিত ও সুবিদিত প্রতিষ্ঠান তেজগাঁও মহিলা কলেজ। ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল  তেজগাঁও এলাকার মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে  পড়া নারীদের শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তেজগাঁও মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জনাব সাইদুর রহমান।  গ্রীন   রোডে হামিদুল হকের বাড়িতে তেজগাঁও মহিলা কলেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ৭৬ নং পূর্ব তেজতুরী বাজার ফার্মগেট এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
 
কলেজটিতে বিভিন্ন সময় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ, সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপি, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদগণ। এই কলেজের বহু শিক্ষার্থী কর্মজীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুনাম অর্জন করে চলছে।
 
বর্তমানে শুধু তেজগাঁও এলাকায় নয়, ঢাকাসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলার অসংখ্য নারী শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ অনুকূল ও নিরাপদ পরিবেশে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। ১৯৭২ সালে উচ্চমাধ্যমিক, ১৯৮৭ সালে ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (পাস) কোর্স, ২০১০ সালে স্নাতক (সম্মান), ২০১১ সালে বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্স ও ২০১৫ সাল হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।  অত্র কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্সসহ ১২টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ২টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালিত হচ্ছে।
 
তথ্য ও প্রযুক্তির সাথে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কম্পিউটার ল্যাবসহ ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের জন্য রয়েছে আধুনিক ও সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার। ছাত্রীদের মানসিক দক্ষতার বিকাশ ও চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে বিজ্ঞান ক্লাব, আইসিটি ক্লাব, ল্যাংগুয়েজ ক্লাব ও সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র। তাছাড়া কলেজে রয়েছে একটি অত্যাধুনিক পাঠাগার যেখানে একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। ছাত্রীদের সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবোধ সৃষ্টিতে জাতীয় দিবসসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন, বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বার্ষিক শিক্ষা সফর এবং অনার্স শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক
বিষয়ে শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। স্মার্ট বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের ডাটাবেস তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন প্রণয়ন, নির্বাচন, ফল প্রকাশ, সফটওয়্যার এর মাধ্যমে সম্পাদন করা হয়।
 
বর্তমানে কলেজে প্রায় ৩০০০ ছাত্রী পাঠরত আছে এবং  সুদক্ষ, বিজ্ঞ, প্রশিক্ষিত শিক্ষকমন্ডলী পাঠদান করে চলেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং পিএইচডি তে অধ্যয়নরত আছেন। ঢাকা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নারী শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান তেজগাঁও মহিলা কলেজ, একগুচ্ছ সংগঠিত ও স্বপ্রণোদিত শিক্ষকমন্ডলীর তত্ত্বাবধানে যত্নশীল পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শতভাগ পাসসহ ভালো ফলাফল নিশ্চিত করছে এবং বর্তমানে সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধ উদ্বুদ্ধ হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের নারী জনগোষ্ঠীকে দক্ষ প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক জনগোষ্ঠীতে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে সমুন্নত রাখতে তেজগাঁও মহিলা কলেজ দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।