নারী মহিয়সী, কল্যাণময়ী, ভগ্নি, জায়া, জননী, শুধু পরিবার নয়, সমাজ দেশ এমনকি গোটা পৃথিবীর উন্নয়ন কল্পনাও করা যায়না নারীকে বাদ দিয়ে। তাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ভাষায়-
‘‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর”
নারীরা সমাজের অর্ধাংশ। তাই নারীকে বাদ দিয়ে সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন কখনই সম্ভব নয়। আদর্শ সমাজ ও দেশ রচনায় নারী ও পুরুষ সমান্তরালভাবে কাজ করে। তাই মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার আদর্শকে সামনে রেখে, ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেট ১৯৭২ সনে তেজগাঁও মহিলা কলেজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা, ডিগ্রী পর্যায়েবিএ, বিএসএস ও বিবিএস, বিবিএ প্রফেশনাল কোর্স সহ ১২টি বিষয়ে অনার্স ও ২টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। পাঠ দানের জন্য অভিজ্ঞ ও সুদক্ষ শিক্ষকমন্ডলী। পূর্বে কলেজটির যেমন অবস্থাই থাকুক না কেন? জুলাই আগষ্ট বিপ্লবের পর থেকে কলেজটি যেন নব উদ্যমে এগিয়ে চলেছে। এটা সম্ভব হচ্ছে নব গঠিত গভর্নিং বডির সভাপতি জনাব মোঃ ইসমাইল জবিউল্লা এর একান্ত আন্তরিকতায়। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে কলেজ যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিনি যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মত করে কলেজের সামনের রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছেন। বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান করেছেন। ইতোমধ্যে কলেজের মাঠও সংস্কার হয়েছে। আমরা যেন স্যারের হাত ধরেই কলেজের ব্যাপক উন্নয়ন করে নারী শিক্ষার একটা শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তুলতে পারি সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করছি।
শিক্ষাইজাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতিরউন্নতি সম্ভব নয়। দেশের জনসংখ্যারঅর্ধেক নারী, কাজেই নারী শিক্ষার উন্নয়নছাড়া জাতীয় অগ্রগতি অসম্ভব। আর এই নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেই বহুকাল পূর্বেনেপোলিয়ন বলেছিলেন, ”আমাকে একটি শিক্ষিত মাদাও, আমি একটি শিক্ষিতজাতি উপহার দিব”। তাইদেশের উন্নয়ন ও যুগের চাহিদামেটাতে প্রয়োজন যুগোপযোগী নারী শিক্ষা। সেইলক্ষ্যে তেজগাঁও মহিলা কলেজ নতুন শতকেরপ্রত্যাশার সঙ্গে সংগতি রেখে নব উদ্যমেযাত্রা শুরু করেছে। আমরাএই প্রতিষ্ঠানটিকে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেঅবিরাম প্রয়াস চালাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষ থেকেকলেজটিতে অনার্স কোর্স খোলা হয়েছে। বর্তমানেকলেজটিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, মার্কেটিং, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, গণিত, প্রাণিবিদ্যা ওবিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্সসহ মোট ১২টি বিষয়েঅনার্স কোর্স এবংহিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়েমাস্টার্স কোর্সে পাঠদান চলছে। আরো তিনটি বিষয়েঅনার্স কোর্স ও তিনটি বিষয়েমাস্টার্স কোর্স অধিভুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমার বিশ্বাস, খুবশিঘ্রই নারী উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেকলেজটি শুধুমাত্র ঢাকা শহরে নয়, সমগ্র বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানতৈরী করতে সক্ষম হবে।